ফরিদগঞ্জে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর জমি দখল করে দোকান ও সৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। সে দোকানের ঢাল হিসেবে রাতারাতি নির্মাণ হচ্ছে মসজিদ। মসজিদ ঘর নির্মাণ না হতেই মেহরাব প্রস্তুত করে সেখানে কালেমা তাইয়্যেব লেখা, কাবা শরীফ ও মিনার অংকিত টাইলস বসানো হয়েছে। এলাকাবাসী জমি দখল কারীকে নিষেধ করেছে। তা অমান্য করে নির্মাণ ও দখল অব্যাহত রয়েছে। দখলদার দুই সহোদরের নাম শাহজাহান ও রাজা। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেছেন, আমরা খবর শুনে তৎপর হয়েছি। সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানোর পর তারা কাল রোববার কাজ বন্ধ করেছে। পরবর্তীতে সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পৌর এলাকার ডায়াবেটিস হাসপাতালের পাশে প্রায় পাঁচ শতাংশ জমি (১৩৬ নং ফরিদগঞ্জ মৌজা, খতিয়ান নম্বর ৪, দাগ নম্বর ৩০৮৪)’র মালিক মো. শাহজাহান। তিনি সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতার ভাই। ওই জমিতে গত কয়েক মাসে প্রায় ১৫ টি দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন মো. শাহজাহান ও তার ভাই রাজা।
এলাকাবাসী দাবী করেছেন, দক্ষিণ পূর্ব কোণে অন্তত তিনটি দোকান ও সম্পূর্ণ টয়লেট সওজ এর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। ওই নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই রাস্তার পাশে রাতারাতি মসজিদ ঘর নির্মাণ চলছে।
সরজমনি দেখা গেছে, মসজিদের জন্য দেয়াল, চালা ও ঘর নির্মাণ হয়নি। কিন্তু, তার আগেই মেহরাব প্রস্তুত করে সেখানে কালেমা তাইয়্যেব লেখা, কাবা শরীফ ও মিনার অংকিত টাইলস বসানো হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে ধর্মপ্রাণ মানুষ নিন্দার ঝড় তুলেছেন। তারা বলেছেন, এভাবে সরকারি জমি দখলে রাখার জন্য এক ব্যক্তি মসজিদ ঘরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে এমনটা মেনে নেয়া যায় না।
এ বিষয়ে খোঁজ নেয়ার সময়ে পাশে উপস্থিত মো. আবুল কালাম (৬৫) বলেন, আমরা কয়েক বছরেও একটি মসজিদ ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারি না। অথচ, রাতারাতি মসজিদ হয়ে যাচ্ছে। তদুপরি, ঘর নির্মাণ না হতে মিম্বর ও আল্লাহর নাম লেখা টাইলস স্থাপন করা একটি বড় রকমের শয়তানির শামিল। মো. সুলতান আহমেদ (৫৬) বলেছেন, এ কাজ বন্ধ করে তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া প্রয়োজন। তা না হলে এমনতর অন্যায় বন্ধ হবে না। এত বড় জুলুমবাজের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজা স্বীকার করে বলেন, হ্যাঁ, এই জমি সরকারের এ্যাকোয়ার করা। মসজিদ নিজেদের সম্পত্তিতে না করে সরকারি জমিতে করছেন কেনো। এমন প্রশ্নে তিনি বিকৃত আচরণ করেন। এক পর্যায়ে বলেন, মানুষ তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ার জন্য রাস্তার পাশে মসজিদ করেছি। অপর প্রশ্নে বলেন, সারা দেশে সরকারি জমিতে মসজিদ হচ্ছে। আমি কোনো অন্যায় করি নাই। দোকান ঘর ও টয়লেটের বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দেননি। ছবি তোলার সময় তিনি অশালীন বাক্য ব্যবহার করেন।
এদিকে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া বলেছেন, আমরা আপনার মাধ্যমে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তৎপর হয়েছি। সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে গুরুত্ব সহকারে কথা বলেছি। আজ (রোববার) বিকালে ওই কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সওজ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।